কলমাকান্দা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ছাত্রদল নেতা মো. আব্দুল গাফফারকে মারধরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বহুল আলোচিত ব্যক্তি ও বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ রতনের জামিন ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে থানার ভূমিকার সমালোচনা করে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে উপজেলা বিএনপি।
জানা গেছে, বিস্ফোরক, নাশকতা, চাঁদাবাজি ও চোরাচালানসহ অন্তত নয়টি মামলার আসামি আব্দুল ওয়াদুদ রতন। তিনি সদ্য অপসারিত উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ বাবুলের ছোট ভাই এবং সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তার বাড়ি কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সেইচাহানি গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এলাকায় বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও প্রশাসনের ‘নীরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত ২৭ মে। ওই দিন বিকেলে হরিপুর চকবাজার এলাকায় ছাত্রদল নেতা মো. আব্দুল গাফফার (২৬) সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। পরে ২৯ মে রাতে কলমাকান্দা থানায় তিনি নিজেই মামলা দায়ের করেন। মামলায় রতনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৮-১০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়।
মামলার পরপরই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে রতনকে তার নিজ এলাকা নাজিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। তবে ৩০ মে সকালে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি জামিনে মুক্তি পান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে উপজেলা বিএনপি।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর আহমেদ নাজিম অভিযোগ করেন, “আব্দুল ওয়াদুদ রতনের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক ও নাশকতা মামলার তথ্য গোপন করে পুলিশ মামলাটিকে ‘সরল’ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এর ফলে আদালত সহজেই জামিন দিয়েছে। আমরা থানাকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছি। এর মধ্যে তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার না করা হলে থানার সামনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।”
এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বলেন, “আসামিকে আদালতে পাঠানোর পর পূর্বের মামলাগুলোর ফরওয়ার্ডিং দিতে কিছুটা সময় লেগেছে। আমরা আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। সকলকে শান্ত থাকতে ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে অনুরোধ জানাচ্ছি।”
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আব্দুল ওয়াদুদ রতন পুনরায় গ্রেপ্তার হননি। ফলে থানার সামনে বিএনপি ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।