নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ছত্তার পাগলা হাওর বেষ্টিত উপজেলা বারহাট্টার সিংধা ইউনিয়নের নুরুল্লারচর গ্রামের বাসিন্দা। জীবনের প্রায় সবটুকুই ঢেলে দিয়েছেন হাওরে ঘুরে ঘুরে ঘাটু গান গেয়ে।
প্রায় সময়েরই মোহনগঞ্জের লোকাল ট্রেনেও গান করতেন তিনি। হাওরবাসী এবং লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের জনপ্রিয় এই শিল্পী ২০১৪ সালের বৈশাখ মাসের চার তারিখে ৯৭ বছর বয়সে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় মারা যান।
মৃত্যুর সময় তিন কন্যা, দুই ছেলে ও স্ত্রী রব্বানুকে রেখে যান। বর্তমান ৭২ বছর বয়সী সত্তার পাগলার স্ত্রী স্বামীর রেখে যাওয়া একমাত্র সম্বল ২২ শতাংশ বাড়ি এবং তিন কন্যা ও পুত্র নিয়ে বহু কষ্টে জীবনযাপন করছেন।
থাকার একমাত্র ঘরটি ভেঙে পরলেও দেখার এবং সহযোগিতার কেউ নেই। কোন রকমে টেনেটুনে চলছে তাদের সংসার। জীবন সংগ্রামের কঠিন বাস্তবতায় পরে তারা যেন কোন রকমে টিকে রয়েছেন। তবে মনের গহীনে বাঁধা আছে এক সাগর পরিমাণ কষ্ট।
গেলো ২০১৪ সালে ছত্তার পাগলা মারা গেলেও এখন কবরটি সংস্কার করা যায়নি। কবরটিতে মাটি পর্যন্ত কাটা হয়নি। বর্ষাকালে পানি উঠে যায়। তাই যদি কোন রকমে কবরটি সংস্কার এবং মায়ের থাকার ঘরটি সংস্কার করা যেত তাহলে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচতেন তারা ।
সেবছর অনেকটা গোপনে অজানায় হারিয়ে যাওয়া ছত্তার পাগলা সর্বশেষ আলোচনা আসেন শাকিব খান অভিনীত তান্ডব সিনেমাটি মুক্তির পর। সিনেমায় ছত্তার পাগলার “কে দিল পিরিতের বেড়া লিচুরও বাগানে গানটি “। তবে তান্ডব সিনেমার পরিচালক গানটি ব্যবহার করে মাত্র ২০ হাজার টাকা ছত্তার পাগলার পরিবারকে দিয়েছেন এমনটাই দাবী তার পরিবারের।
তবে তান্ডব সিনেমার পরিচালক পরবর্তীতে ছত্তার পাগলার পরিবারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। ছত্তার পাগলার পরিবারের দাবী সেই আশ্বাস যেন আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ না থাকে। মরহুম ছত্তার পাগলার ছেলে মোঃ জয়নাল জানান, আমরা দুই ভাই জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করি। আমাদের বৃদ্ধা মাকে যেন থাকার ঘরটি যেন ঠিক করে দেওয়া হয়। তান্ডব ছবির পরিচালক যেন এতটুকু তাদের জন্য করেন এমনটাই দাবী জয়নালের।
ছত্তার পাগলার স্ত্রী মোছাঃ রব্বানু বলেন, আমার স্বামী বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। কেউ খোঁজ খবর নেয়নি আমাদের। কেউ এগিয়ে আসেনি। উনার মৃত্যুর এত বছর পর উনি আলোচনায় এসেছেন তান্ডব সিনেমার জন্য। তবে আমাদের কোন চাওয়া নেই। আমার স্বামীর কবরটা সংস্কার করে দেওয়া হোক। আর আমার স্বামীর ভিটেটা সংস্কার করে দেওয়া হোক। আর কোন দাবী নেই আমার।