মুহা. জহিরুল ইসলাম অসীমঃ অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা জয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির জন্য নির্বাচিত নেত্রকোণার চারজন শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৮০ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২২ জুন) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা শেষে তাদের হাতে এই অর্থ তোলে দেন জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস।
এই চারজন মেধাবী শিক্ষার্থীরা হলেন ইংরেজি বিভাগে মো. সাজ্জাদ আলী, অর্থনীতি বিভাগে মানব তালুকদার, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে রেশমা আক্তার এবং বাংলা বিভাগে বন্যা রানী সরকার।
সূত্র জানায়, এই চারজন মেধাবী শিক্ষার্থী নিজেদের প্রচেষ্টা ও প্রতিভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হন। তবে তাদের প্রত্যেকেই আর্থিক সংকটে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়লে খবর পেয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।
এই অবস্থা জেলা প্রশাসনের নজরে এলে জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রত্যেককে ২০,০০০ টাকা করে শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হয়, যাতে তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন।
নেত্রকোণা রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি প্রবীণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর ননী গোপাল সরকার বলেন, “মেধাবীরা চিরকাল জাতির সম্পদ। নেত্রকোণার ৪জন মেধাবী অথচ দরিদ্র শিক্ষার্থী তাদের আপন মেধায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সহ পড়ার খরচ চালাতে অসমর্থ হয়ে মাননীয় জেলা প্রশাসকে বরাবরে আর্থিক সহায়তার আবেদন করেন। নেত্রকোণার সুযোগ্য ও মানবিক জেলা প্রশাসক মহোদয় বিষয়টি অতীব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে প্রত্যেককে ২০ হাজার করে মোট ৮০হাজার টাকা নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। বিষয়টি জেনে একজন অধ্যাপক হিসেবে আমি আপ্লুত চিত্তে জেলা প্রশাসক জনাব বনানী বিশ্বাসকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাঁর এই অবদান সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর জীবনে অনুপ্রেরণা যুগাবে। এটি একটি মহৎ মানবিক কাজের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, চারজন শিক্ষার্থী ভর্তি সহায়তার জন্য আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কলেজের মাধ্যমে যাচাই করে দেখা যায়, তারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, “এই মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিঃসন্দেহে আমাদের জেলার সম্পদ। ভবিষ্যতে যেন কেউ আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যেই জেলা প্রশাসনের সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন, যাতে মেধার বিকাশে অর্থ কখনো বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।”
এছাড়াও স্থানীয়ভাবে এই পদক্ষেপকে শিক্ষাবান্ধব প্রশাসনের একটি মানবিক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পরিবার ও অভিভাবকরাও এ সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।