মোহনগঞ্জ সংবাদদাতা:
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ পৌর শহরের কাচারী রোডে দ্বিতল মাছ বাজার ভবনটি নির্মাণ হওয়ার পরও ২ বছর ধরে পরিত্যাক্ত রয়েছে। মাছ বাজার ভবনটি নিমার্ণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
কিন্তু, এ ভবন পরিচালনার জন্য মোহনগঞ্জ পৌরসভার নিকট হস্তান্তর করেছে। তারাও পরিচালনার দায়িত্ব কাউকে না দেওয়ায় এখন পরিত্যক্ত বা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ভবনটি।
গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারের লক্ষ্যে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীদের মাঝে দোকান বরাদ্দ দিতেই এ মাছবাজার ভবনটি নির্মিত হয়েছিল।
এলজিইডি সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে পৌর শহরের কাচারীরোডে গ্রামীণ মাছবাজার অবকাঠামো নিমার্ণ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়।
এলজিইডির তত্বাবধানে চারতলা ভবনের দ্বিতল নিমার্ণের কাজ পায় নেত্রকোনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুস্থির রানী সাহা রায়। এ ভবন নিমার্ণে ব্যয় দুই কোটি ৫ লাখ টাকা ধরা হয়। মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত।
তিন দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে এখন তা ২০২৫ সালে পৌরসভার নিকট হস্তান্তর করে। তবে, পৌর কতৃর্পক্ষ হস্তান্তর পেলেও তারাও পএিকায় বিঞ্জপ্তি প্রকাশ করে দোকান বরাদ্দ দিচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাছবাজার ভবন নিমার্ণে ( প্রণয়ন জটিলতা) ঠিকাদারের ত্রুটি থাকায় এ প্রকল্প চালু হতে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে। পড়ে থাকায় একদিকে ভবনের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে প্রকল্পের মূলউদ্দেশ্যও পূরণ হচ্ছে না। এতে রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে উন্নয়ন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গ্রামীন বাজার উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি ও অকৃষি পণ্যবাজারজাত করণে সুবিধা বাড়ানো, গ্রাম পর্যায়ে ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি এবং স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্হান সৃষ্টি। গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চারের উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী ইকরামূল হোসেন জানান,আমি খোঁজ নিয়ে জানাব। ভবন নিমার্ণে ত্রুটি থাকলে সবাই মিলে রেজ্যুলেশন করে কিভাবে ভবন চালু করা যায় সেই সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
নির্মাণে ত্রুটি, পরিত্যক্ত মাছবাজার ভবন বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) সরেজমিনে পৌরশহরের মাছবাজার ভবন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, কংস নদের পাড়ে স্যানিটেশন (ট্যাঙ্কি) ব্যবস্থা নির্মাণ, দ্বিতল ভবন সিঁড়ি করার কথা থাকলেও ঠিকাদার তার উল্টোভাবে ভবন নিমার্ণ করেছেন; এটি কতটা ভবন চালুতে কার্যকর হবে, তা নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। ভবনের মূল নকশা পরিবর্তন করায় কোন মাছ বিক্রেতা বা ব্যবসায়ী বরাদ্দ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
কথা হয় ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান জানান, ভবন নিমার্ণে সঠিকভাবে লোকেশন চিহ্নিত করা হয়নি। নয়তো বাথরুম টেঙ্কি কখনো কি ভবনের সন্মুখে দেয়। মাছ ব্যবসায়ী দিলীপ বর্মণ জানান, ভবন নিমার্ণে ভুল হয়েছে। আমরা ছোট মানুষ। বললে আবার কি বলে। ভবনের সামনের দিকে দেয়াল তৈরি করে মাকের্ট চালু করা যাবে না। ঠিকাদার প্রতিষ্টানের ম্যানেজার পঙ্কজ রায় বলেন, ভবন নিমার্ণে ভুলত্রুটি হয়নি।
পৌর কতৃর্পক্ষ যেভাবে জায়গা দেখিয়ে দিয়েছে; সেভাবেই বাস্তবায়ন হয়েছে। পৌরসভার প্রকৌশলী মো.সাইফুল আমিন বলেন, জমির মালিকানা পৌরসভার। ভবন নিমার্ণ করেছে এলজিইডি ও ঠিকাদার। তবে নিমার্ণে ত্রুটি হয়েছে স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারের সিকিউরিটি মেয়াদ পূর্ণ হলে অর্থ ফেরত দেয়ার পর ভবনের সামনের অংশের দেয়াল অপসারণ করবো। তখন আব সমস্যা থাকবে না।
পৌর প্রশাসক ও ইউএনও জুয়েল আহমেদ বলেন, পৌর প্রকৌশলী বিষয়টি দেখছেন। মোহনগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল আমীন বলেন, মাছ বাজারের ভবনের দোকান বরাদ্দের নোটিশ প্রদানের বিষয়াটি প্রক্রিয়াধীন।