মুহা. জহিরুল ইসলাম অসীম:
২০২৫ সালের এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষার ফলাফলে নেত্রকোণা জেলার সার্বিক চিত্রে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। জেলা শিক্ষা অফিসার কার্যালয়ের তথ্যমতে, এসএসসিতে জেলার গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৬.১৪ শতাংশ।
জেলায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় মোট ১৯,৫৫১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১১,৫২৮ জন। সবচেয়ে বেশি পাসের হার রেকর্ড করেছে নেত্রকোনা সদর উপজেলা—৭৫.৭৫%। অন্যদিকে সবচেয়ে কম পাসের হার বারহাট্টা উপজেলায়—৩৯.৩৬%।
এসএসসিতে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৪৮ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে নেত্রকোনা সদরেই জিপিএ-৫ পেয়েছে সর্বোচ্চ ৩৬১ জন এবং সবচেয়ে কম খালিয়াজুরীতে—মাত্র ৮ জন।
অন্যান্য উপজেলায় পাশের হার, মোহনগঞ্জ ৬৪.৫৮%, খালিয়াজুরী ৫২.০১%, দুর্গাপুর ৫৪.৪০%, কলমাকান্দা ৫০.৩৮%, পূর্বধলা ৬১.৬১%, কেন্দুয়া: ৪৭.০০%, আটপাড়া ৫৫.০১%, মদন ৬০.৪২%।
দাখিল পরীক্ষায় ৩,৪৬০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২,৩০৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। গড় পাসের হার ৬৭.৪০ শতাংশ। এর মধ্যে মোহনগঞ্জ উপজেলায় সর্বোচ্চ পাসের হার ৯১.৭৭% এবং বারহাট্টায় সর্বনিম্ন ৪৫.৮০%। জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ৬৬ জন, যার মধ্যে ৩৩ জনই নেত্রকোনা সদর উপজেলার। উল্লেখযোগ্যভাবে, মদন, খালিয়াজুরী, আটপাড়া ও দুর্গাপুর উপজেলায় কেউ জিপিএ-৫ অর্জন করতে পারেনি।
ভোকেশনাল শাখায় এ বছর পরীক্ষার্থী ছিল ২,৩৫৪ জন, যার মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১,৮৪১ জন। গড় পাসের হার ৭৩.১৬%। পূর্বধলা উপজেলায় সর্বোচ্চ ৯২.৪৭% এবং মোহনগঞ্জ উপজেলায় সর্বনিম্ন ৪৮.৫২%। খালিয়াজুরী উপজেলায় এ শাখায় কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ভোকেশনালে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৩ জন শিক্ষার্থী, যার মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলায় সর্বোচ্চ ১৩ জন।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) স্বপ্না রানী সরকার বলেন, “সার্বিকভাবে জেলার ফলাফল ইতিবাচক। কিছু উপজেলায় ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে কম হলেও, আগামীতে শিক্ষক, অভিভাবক ও প্রশাসনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জেলাব্যাপী ফলাফল আরও উন্নত হবে বলে আশাবাদী।”
নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, “জেলায় শিক্ষা খাতে উন্নতির এই ধারা ধরে রাখতে হলে উপজেলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক চ্যালেঞ্জগুলোর সঠিক বিশ্লেষণ এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা চাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও সমান সুযোগ পাক এবং ফলাফলে ইতিবাচক অগ্রগতি ঘটুক। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার মানোন্নয়নে সবধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”