নেত্রকোনা বুধবার, ১৬ই এপ্রিল ২০২৫, ৩রা বৈশাখ ১৪৩২, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ


নববর্ষকে বরণ করতে কেন্দুয়ায় খনার মেলা 

নববর্ষকে বরণ করতে কেন্দুয়ায় খনার মেলা 
নববর্ষকে বরণ করতে কেন্দুয়ায় খনার মেলা 

নিউজ ডেস্কঃ

"জল ভালা ভাসা,মানুষ ভালা চাষা" এই স্লোগানকে ধারণ করে চৈত্র সংক্রান্তির প্রথম প্রভাত ভোর ৬ টায় শুরু হয়ে ১লা বৈশাখে ভোর ৬ টা পর্যন্ত নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার আঙ্গারোয়া গ্রামে শুরু হয়েছে এক ব্যতিক্রমি উৎসব—‘খনার মেলা’। বাংলার লোকজ সংস্কৃতি, গান, কিচ্ছা, শ্লোক এবং জ্যোতিষশাস্ত্রের প্রাণবন্ত উপস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এই মেলা এক নতুন রূপে ভরপুর হয়েছে।

এই মেলা দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এবং এতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে শিল্পী, গবেষক ও দর্শকরা অংশগ্রহণ করেছেন। মেলা যেন একটি বড় সাংস্কৃতিক মিলনমেলা হয়ে উঠেছে, যেখানে মাটির টান, কৃষিজ্ঞান এবং জীবনদর্শনকে কেন্দ্র করে নানা সেশন ও পরিবেশনাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বাউল গান, কিচ্ছাপালা, গাইন গীত, খনার শ্লোক এবং খনার কুদি মিলিয়ে  ঘন্টার পর ঘণ্টা সজীবতায় মেলা রূপ নিয়েছে। সুরের মায়ায় ভরিয়ে উঠেছে পরিবেশ। গানের মধ্য দিয়ে জীবনের গহীন তল, মানুষের চেতনা এবং ভবিষ্যতের বার্তা তুলে ধরা হয়েছে।

বাউল সুনীল কর্মকার, প্রবীণ বাউল মিয়া হোসেন শেফালি গায়েন, কফিল আহমেদ, কৃষ্ণকলি ও তার দল, কলিম মুকুল, নূপুর সুলতানা সহ তরুণ শিল্পীরা মেলাকে আরও জীবন্ত করে তুলেছেন।

এই মেলায় শুধু গান ছিল না, বরং ছিল বিশেষ আলোচনাও। বিশিষ্ট কবি, লেখক, গবেষক ও সংস্কৃতিবিদেরা স্বাস্থ্য, পরিবেশ, কৃষি, জীবন ও জ্যোতির্বিদ্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। খনার বাণীর আধুনিক প্রাসঙ্গিকতা এবং তার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বক্তৃতার মাধ্যমে উঠে এসেছে।

এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দা, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মিডিয়া প্রতিষ্ঠান কুল এক্সপোজার-এর সহযোগিতায় এই মেলা হয়ে উঠেছে এক জীবন্ত জাদুঘর, যেখানে প্রতিটি শব্দ মাটির মধ্যে নয়, মানুষের চেতনায় চাষ হয়ে ওঠে। আয়োজক কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, খনার হলো নারী নির্যাতনের প্রতীক। তাকে এ আয়োজনের মাধ্যমে তুলে ধরা ও হারিয়ে যাওয়া লোক সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনাই এর লক্ষ্য।

 



বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: