সামনেও চাপে থাকবে দেশের অর্থনীতি
বাংলাদেশের অর্থনীতি সামনেও চাপে থাকবে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, গত অর্থবছরের চেয়েও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমতে পারে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে। গত অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যা এবার কমে হতে পারে ৫ দশমিক ৬। পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট এপ্রিল-২০২৪’ প্রতিবেদনে এমন মূল্যায়ন রয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে সংবাদ সম্মেলন হয়। এ সময় ‘দক্ষিণ এশিয়ার ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেকসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ডেভেলপমেন্ট আপডেট প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার। এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন সংস্থার দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিসকা ওনসর্জ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ভোগ খুব একটা বাড়বে না। জ্বালানিস্বল্পতা এবং মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি কম হওয়ার সঙ্গে ব্যাংক ঋণের ক্রমবর্ধমান সুদের হার ও আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতা বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করবে। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার শপথ নেওয়ার পর রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কমলেও অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি রয়েছে। মুদ্রা এবং বিনিময় হার সংস্কারে পর্যাপ্ত অগ্রগতি না হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যেতে পারে। সঙ্গে বজায় থাকতে পারে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। ব্যাংক খাতে তারল্য সংকোচন এ খাতে সংকট বাড়াতে পারে। রাজস্ব ঘাটতি এবং এর ফলে বাজেট ঘাটতি বেড়ে আর্থিক চাপ তৈরি করতে পারে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, গত অর্থবছরে বেসরকারি ভোগ এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের চেয়ে কমেছে। বিনিয়োগে ধীরগতির কারণের মধ্যে রয়েছে– রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আমদানি নিয়ন্ত্রণ, জ্বালানিস্বল্পতা এবং বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্গে বিনিময় হারে টাকার পতনে মূলধনি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমিয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকৃত মজুরি ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে অবিরত কমছে। চাহিদা কম থাকা এবং আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে গত অর্থবছরে ভোগ্যপণ্য আমদানি ৮ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। ভোগ্যপণ্য কেনার জন্য ঋণ কমেছে। মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে ২০ শতাংশ। শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে ১৭ শতাংশ। সরকারি বিনিয়োগেও ধীরগতি। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ৩১ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: