১৭ বছর কারাভোগের পর নেত্রকোনার গণ সংবর্ধনায় বাবর

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক প্রকাশনা সম্পাদক লুৎফুজ্জামান বাবর বলেছেন,আওয়ামীলীগ সরকার বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বাক্ষী দেয়ার জন্য আমার উপর নির্যাতন করেছে কিন্তু আমি মিথ্যা স্বাক্ষী দেইনি। এই ফ্যাসিষ্ট হাসিনা পালিয়ে গেলেও দেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে,তাই সেই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে সবাইকে ঐক্যবন্ধ থাকতে হবে।
রোববার বিকেলে জেলা শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে নেত্রকোনা জেলা বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত গণসংবর্ধণা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেছেন।
নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহবায়ক ডাঃ আনোয়ারুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালীর সঞ্চালনায় এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নিবার্হী কমিটির সদস্য এডভোকেট আরিফা জেসমিন নাহীন,নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান,সাবেক সভাপতি এডভোকেট নুরুজ্জামান নুরু জেলা বিএনপির সিনিয়ির যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট মাহফুজুল হক, যুগ্ম আহবায়ক এস এম মনিরুজ্জামান দুদুসহ অন্যরা।
এ সময় তিনি আরো বলেন,গণ অভ্যূত্থানের মাধ্যমে দেশের ছাত্রজনতা দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছে। এই আওয়ামীলীগ সরকারের সময় দেশের মানুষের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। দেশের মানুষ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছিল। তিনি আগামী জাতীয় নিবার্চনে বিএনপিকে ভোট দিয়ে তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে সকলের প্রতি আহবান জানান। এ সময় নেত্রকোনা শহরের ঐতিহাসিক মোক্তারপাড়া মাঠে জেলার ১০ উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও হাজারো ছাত্র জনতা উপস্থিতিতে ভালোবাসায় সিক্ত হন সদ্য কারা মুক্ত ভাটি বাংলার সিংহ পুরুষ খ্যাত এ নেতা।
নেত্রকোনার হাওরবেষ্টিত তিন উপজেলা-মদন,মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী। এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত নেত্রকোনা-৪ আসন। এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। হাওরবেষ্টিত জনপদের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয় একজন মানুষ।
লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর বিভিন্ন মামলায় দন্ড হয় তার। এরই মধ্যে দুটি মামলায় তাকে মৃত্যুদন্ড দেয় আদালত । একটিতে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদন্ড।২৪ এর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতন হওয়ার পর এসব মামলার আপিল শুনানি শেষে একে একে সব মামলা থেকে খালাস পান লুৎফুজ্জামান বাবর। এর মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় ৮ বছরের দন্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পান তিনি।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: