নেত্রকোনা রবিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৫, ৬ই বৈশাখ ১৪৩২, ২১ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ


নেত্রকোণার হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা

নেত্রকোণার হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।। ছবিঃ নেত্র ভয়েস
নেত্রকোণার হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।। ছবিঃ নেত্র ভয়েস

নেত্রকোণার হাওর অধ্যুষিত তিন উপজেলা—খালিয়াজুরি, মোহনগঞ্জ ও মদনে পুরোদমে চলছে বোরো ধান কাটার কাজ। জেলার কৃষকেরা এখন বছরের একমাত্র প্রধান ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি উপকরণ সহজলভ্য থাকায় এবার বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে নেত্রকোণায় ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাওরাঞ্চলের জমির পরিমাণ ৪১ হাজার ৭৫ হেক্টর। ইতোমধ্যে হাওরের প্রায় ৪০ শতাংশ জমির ধান কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, গত বছরের তুলনায় এবার প্রতি একরে ৪০ কেজি বা এক মন পর্যন্ত বেশি ধান উৎপাদন হতে পারে।

খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষক মনির হোসেন জানান, “আল্লাহর রহমতে এবার কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি, শিলাবৃষ্টি বা ভারী বৃষ্টিপাত ছিল না। ফলে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আমরা প্রতি মণে স্থানীয়ভাবে ১২০০ টাকা দরে ধান বিক্রি করছি।”

মদন উপজেলার শিক্ষক রাশেদ বিন সিদ্দিকী বলেন, “প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ধান ইতোমধ্যে কাটা শেষ। আবহাওয়া ভালো থাকলে কৃষকেরা নির্বিঘ্নে বাকি ধানও ঘরে তুলতে পারবেন।”

জেলার হাওর রক্ষা বাঁধ সঠিকভাবে নির্মাণ ও তদারকির ফলে আগাম বন্যার ঝুঁকি অনেকটাই কমে এসেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, জেলার ৩৮০ কিলোমিটার ডুবন্ত বাঁধের মধ্যে ১৪৬.১২ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতে ৩১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। সকল কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

বর্তমানে হাওরের ধান কাটায় ১২৫টি কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহৃত হচ্ছে, যা ধান কাটার কাজকে দ্রুত ও সহজ করে তুলছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের শতকরা ৮০ ভাগ পাকা ধান দ্রুত কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে, যাতে হঠাৎ বন্যার ঝুঁকি এড়ানো যায়।

জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, “কৃষকদের সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমরা ভালো উৎপাদনের আশা করছি।”




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: